Sunday, February 9, 2014

কক্সবাজারে যে কটেজে হানিমুন, সে কটেজেই আত্মহত্যা


স্টাফ রিপোর্টার : ইঞ্জিনিয়ার স্বামীকে জড়িয়ে ধরা একটি ছবি বুকে নিয়ে এবং ৫ পৃষ্ঠার একটি চিরকুট লিখে কক্সবাজারে আত্মহত্যা করেছে ঢাকার এক পর্যটক নারী। হোটেল মোটেল জোন কলাতলীর বিচ সিটি রিসোর্টে ঘটেছে এ ঘটনা। পুলিশ কটেজের ১১০ নম্বর কক্ষ থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে।
 পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, বিয়ের পরে বরকে নিয়ে এ কটেজেই হানিমুন করেছিলেন এই নারী। তার হাতের লেখা চিরকুটে এমন তথ্য রয়েছে বলে জানান কক্সবাজার সদর থানার অতিরিক্ত সার্কেল ছত্রধর ত্রিপুরা। ৫ পৃষ্ঠার চিরকুটে তিনি লিখেছেন, মাসুদ, আমি জানি আমার মৃত্যু নিয়ে কেউ হাসবে। কেউ বিরক্ত হবে। কেউ ঘৃণা করবে। 
আবার কেউ কাঁদবে। আমার ফ্যামিলি ও ফ্রেন্ডরা কাঁদবে। তোমরা হাসবে, ভীত হবে, ঘৃণা করবে, আর জিডি করার জন্য থানায় দৌড়াবে। তুমি আর তোমার মা যে খেলা দেখালে! এরপরও আমি তোমাকে এত ভালবাসি, কেন জানি না! তোমার আত্মীয়স্বজন আমাকে  বোঝেনি, বুঝতে চায়নি। 
সেটা মেনে নেয়া যায় কিন্তু ১০ বছর প্রেম করেও তুমি আমাকে বোঝোনি, বুঝতে চাওনি সেটা মেনে নেয়া যায় না। এভাবে বাংলা ইংরেজির সংমিশ্রণে দীর্ঘ চিরকুটে তার বুকে জমানো ক্ষোভ ও দুঃখের কথা লিখেছেন তিনি। বিচ সিটি রিসোর্টের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ জানান, রাজধানী ঢাকার খিলগাঁও এলাকার মোহাম্মদ আলমগীরের কন্যা আসমা উল সুলতানা (৩০) পরিচয়ে তিনি শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় কক্ষটি ভাড়া নেন। তিনি ম্যানেজারের কাছে ১১০ নম্বর রুমটি চেয়ে নেন। 
ওই দিন বিকালে তিনি রুম থেকে বের হয়ে সি-বিচে যান। বিকালে ফিরেও আসেন। শুক্রবার বিকালে রুমে ঢোকার পর থেকে তিনি আর রুম থেকে বের হননি। গতকাল সকাল পেরিয়ে দুপুর গড়ালেও ওই নারীর কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে তারা পুলিশকে খবর দেন। বিকাল ৫টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। এ নারী নিজকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।

 মৃতদেহ উদ্ধারকারী পুলিশ কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর থানার এসআই কামাল আব্বাস জানিয়েছেন, হোটেল কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য মতে সাড়ে ৫টায় ১১০ নম্বর কক্ষের দরজা ভেঙে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। একটি চিরকুটে নিজে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন এ নারী পর্যটক। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

No comments:

Post a Comment