দাম্পত্য জীবনে দুজনের মধ্য নানা সত্য-মিথ্যের
টানাপড়েন লেগেই থাকে। বিশেষ করে স্বামী-স্ত্রী দুজনই উপার্জন করলে দুজনের মধ্যেই
নিজের আর্থিক বিষয়গুলো লুকিয়ে রাখতেই চেষ্টা করেন। ন্যাশনাল এন্ডুমেন্ট
ফর ফিনানসিয়াল এডুকেশন এর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দম্পতিদের
মধ্যে নিজের টাকা-পয়সা নিয়ে এসব লুকোচুরির ঘটনা একেবারেই স্বাভাবিক। প্রতি
তিনজন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে একজন সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর কাছ
থেকে নিজের আর্থিক বিষয়টি লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। আর তাদের মধ্যে ৭৬ শতাংশ
স্বীকার করেন যে এই বিশ্বাসঘাতকতা সম্পর্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
এখানে দেখে নিন, দম্পতিরা অর্থের বিষয় নিয়ে যে সাতটি মিথ্যা অহরহ বলেন।
১. 'আমি বিল পরিশোধ করেছি' : অপরজনের কাছ থেকে এসব তথ্য লুকানোর দুটো কারণ রয়েছে। একটি হলো, আপনার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হতে পারে এমন আশঙ্কা করা। তাই মিথ্যাটা বলে ফেলাটাই ভালো বলে মনে হয়, জানান মানি কোটিং ইনস্টিটিউট এর প্রতিষ্ঠাতা এবং 'দ্য হার্ট অব মানি' বইয়ের লেখক ডেবোরাহ প্রাইস। কেনাকাটার সিদ্ধান্ত যদি একজনের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সে ক্ষেত্রে তিনি অর্থের বিষয়টি গোপন রাখেন তবে সেখানে প্রতারণার মনোভাব তৈরি হয়। দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, কেউ তার আর্থিক অবস্থা নিয়ে লজ্জাবোধ করেন। যার কারণে অপজনের কাছ থেকে তা লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। হয়তো এ অবস্থার কথা জানলে সঙ্গী বা সঙ্গিনী তা মেনে নিতে পারবেন না- এমন ভয়ে তা লুকিয়ে রাখতে চান অনেকেই।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : এ ধরনের সমস্যা আসলে অর্থকে কেন্দ্র করে হয় না। এখানে অন্যকিছু রয়েছে বলে জানান প্রাইস। একা বসে চিন্তা করুন আপনার মনে কেনো এমন হয়। এটি আপনার পার্টনার কীভাবে নিতে পারেন। প্রতারণার পথ গ্রহণ করলে নিজের মধ্যে যে অনুশোচনা তৈরি হয় তাতে আপনারই মানসিক শান্তি নষ্ট হয়। তা ছাড়া সত্যটা জানলে আপনার পার্টনার একে কীভাবে নেবেন ইত্যাদি প্রয়োজনে লিখে লিখে তা বোঝার চেষ্টা করতে পারেন।
২. 'আমি টাকা-পয়সা গুছিয়ে রাখতে পারি না, তুমি করো' : অনেকেই অদ্ভুতভাবে মনে করতে পারেন যে, তিনি টাকা-পয়সা খরচ বিষয়ক কাজগুলো ঠিকমতো করতে পারেন না। হয়তো ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা বা ভাই-বোন বা বন্ধুর মন্তব্য শুনে শুনে নিজের বিষয়ে এই ধারণা হয়েছে আপনার। তাই দায়িত্বশীল হওয়ার চেষ্টা করুন।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : হতে পারে আপনি এসব হিসেব ঠিকমতো রাখতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে খুঁজে বের করুন আপনি কী কী ঝামেলা সৃষ্টি করেন। কত আয় করেন, কত খরচ হয় এগুলো নিশ্চয়ই বোঝেন। কাজেই বাকিটুকুও পারবেন। তা ছাড়া মোবাইলের বিল বা কর্মক্ষেত্রের অন্যান্য খরচ নিশ্চয় একাই করেন। কাজেই পারছেন না তা কিন্তু নয়। অতীতে যদি অর্থ বিষয়ে কোনো বড় ভুল করে থাকেন, তবে তার মানে এই নয় যে আপনি অর্থ ব্যবস্থাপনায় সব সময় ব্যর্থ। তাই অর্থ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কোনো সঙ্কোচ করবেন না।
৩. 'আমরা অবশ্যই যোগান দিতে পারবো' : এটা কোনো নির্জলা মিথ্যা নয়। এটা কোনো কিছু চিন্তা না করে বা আন্দাজ করেই বলা হয়। হয়তো দূরে কোথাও ঘুরতে যাবেন। তার খরচ হিসেব না করেই বলে ফেললেন যে তার যোগান দেওয়া সম্ভব। কিন্তু খুঁটিনাটি হিসেব করে বললে পরে এ নিয়ে অশান্তি তৈরি হয় না।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : আমরা অনেক সময়ই অনেক ক্ষেত্রেই অর্থ খরচ করতে চাই। অনেক সময় আমরা মনের একটি অংশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হই যাকে বলে ইন্সটিঙ্কটিভ ব্রেইন। এর মাধ্যমে বাস্তব অবস্থার উপলব্ধি নয় বরং ইচ্ছার দ্বারা সবকিছু পরিচালিত হয়। ফলে অর্থ খরচের বিষয়টি এ ক্ষেত্রে আবেগ দ্বারা পরিচালিত হয়। তাই এ ধরনের অর্থ খরচের খাত সামনে এসে পড়লে বাস্তবতার নিরিখে ভাবুন।
৪. 'আমার টাকাই তোমার টাকা' : এক জরিপে দেখা গেছে, দুজনের উপার্জনে সংসার চলছে এমন দম্পতিদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজনের লুকানো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, স্টেটমেন্ট, বিভিন্ন এবং সঞ্চয় থাকে। এসব ক্ষেত্রে কথা উঠলেই ভুল তথ্য প্রদান করে তারা নিজেদের আসল তথ্য ঢাকতে চান এবং সত্য উপস্থাপনকে নিজের জন্য অনিরাপদ বলে মনে করেন, জানান 'ইমোশনাল কারেন্সি' বইয়ের লেখক কেট লেভিনসন। এমনকি ভালো উদ্দেশ্য নিয়েও যদি নিজের অর্থ বিষয়ক তথ্য গোপন করা হয়, তবুও সেখানে বিশ্বাসের অভাব থেকেই যায়।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : এসব তথ্য প্রকাশ করতে অনিরাপত্তায় কেন ভুগছেন তা কোনো এক্সপার্টের সঙ্গে আলাপ করে বোঝার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, আপনার এ ধরনের আচরণের পেছনে নিরাপত্তাবোধের বাইরের কোনো বিষয় দায়ী। এ জন্য সঙ্গিনীর সঙ্গে খোলামেলা আলাপও করে নিতে পারেন। যে বিষয়টি আপনাকে তার সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করছে তা উপস্থাপন করাটা জরুরি। এ ক্ষেত্রে অর্থবিষয়ক জটিলতা সমস্যার মুখ্য বিষয় নয়, বরং সঙ্গিনীর সঙ্গে যে শূন্যতা তৈরি হচ্ছে তাই মূল বিষয়।
৫. 'আমি কয়েক বছর ধরে একই জুতা পরছি' : আপনার মনে ভয় হয় যে, নিজের জন্য যা খরচ করছেন সে বিষয়ে আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মনে বিরক্তি বা অভিযোগ তৈরি হতে পারে। এই ভয় থেকে নিজের সামনে একটি ঢাল গড়ে দিতেই এ ধরনের কথা বলা হয়। যদি অর্থের ওপর অপরজনের নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং নিজের বাজে খরচের স্বভাব থাকে তবে এ ধরনের আচরণ করে মানুষ। ছোটবেলায় রাগী বাবার চোখের আড়ালে নতুন কেনা কোনো জিনিস মা যেমন লুকিয়ে রাখতে বলেন, এটাও ঠিক একই মানসিকতা থেকে আসে।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : আর্থিক অবস্থার বাস্তব হিসেব-নিকেশ করুন। খরচের সঠিক হিসেব করে একটি বাজেট তৈরি করুন। নির্দিষ্ট খরচ বাদ দিয়ে অন্যান্য খরচের জন্য কিছু অর্থ আলাদা করে রাখুন। পার্টনারের রাগ হতে পারে এমন খরচের হাত থেকে বাঁচতে এই বাজেটের বাইরে এক পাও এগোবেন না।
৬. 'আমার কোনো ঋণ নেই' : ঋণ নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কারণ সবারই আর্থিক লেনদেন চলতে থাকে। ঋণ নেওয়ার কারণে লজ্জা বোধ হতে পারে বা ঋণী হিসেবে পার্টনার আপনাকে কী না কী মনে করতে পারেন, এই আশঙ্কা থেকে এমন কথা বলে মানুষ। মূলত অবচেতন মনে ঋণ নিয়ে মানুষের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করে এবং একে সম্মানহানির উপাদান বলে মনে করা হয়।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : ঋণ থাকাটা স্বাভাবিক ব্যাপার। তবুও ঋণের ভার থেকে মুক্ত হতে চাইলে কোনো কাউন্সিলর বা এক্সপার্টের সঙ্গে আলাপ করুন। ঋণ যদি যথা সময়ে পরিশোধের অভ্যাস থাকে, তবে তা নিয়ে কোনো লজ্জাবোধের প্রয়োজন নেই। আবার সুদে যদি ঋণ করেন, তবে এটা ব্যবসায়িক লেন-দেনের মতোই বিষয়। তবে ঋণ বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ থাকাটা জরুরি।
৭. 'আমার এত টাকা নেই' : কিছু মানুষ যে পরিমাণ উপার্জন করেন তা লুকিয়ে আরো কম পরিমাণ উপস্থাপন করেন। এটা এক ধরনের আশঙ্কা থেকে আসে। যেমন- আপনি যাকে জীবনসঙ্গিনী করার পরিকল্পনা করছেন তাকে কম উপার্জনের বিষয়টি আকার ইঙ্গিতে বোঝাচ্ছেন। কারণ আপনার মনে ভয়, তিনি আপনার অর্থ দেখে সম্পর্ক গড়তে চান। তাই তার সঙ্গে একটি মিথ্যে নিয়ে ঝুলে রইলেন আপনি। যদি পার্টনারও উপার্জন করেন এবং তার উপার্জন আপনার চেয়ে অনেক কম হয়, তখন তাকে সাহায্য করার ভয় থেকেও এমন তথ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মানুষ।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : এ ক্ষেত্রে অবশ্যই এক বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হতে হবে আপনাকে। অনেক দম্পতি দেখা যায় যারা অনেক অর্থশালী এবং পরস্পরের কাছ থেকে অর্থের যাবতীয় হিসেব লুকিয়ে রাখেন। এ ক্ষেত্রে একজনের অর্থের ওপর অন্যের বাজে উদ্দেশ্য তৈরি হতে পারে এমন ধারণা জন্মে। এ ধরনের আশঙ্কা বা ধারণা সম্পর্কের অবনতি ঘটায় অতি দ্রুত। একটু ভাবুন, এই অর্থ কী এতই বেশি যা আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে প্রতারক বানিয়ে দেবে? আপনি কী এই অর্থের ভার বইতে অপারগ? এসব প্রশ্নের জবাব একজ বিশেষজ্ঞ বুঝিয়ে দিতে পারেন আপনাকে।
সূত্র : বিজনেস ইসনাইডার
এখানে দেখে নিন, দম্পতিরা অর্থের বিষয় নিয়ে যে সাতটি মিথ্যা অহরহ বলেন।
১. 'আমি বিল পরিশোধ করেছি' : অপরজনের কাছ থেকে এসব তথ্য লুকানোর দুটো কারণ রয়েছে। একটি হলো, আপনার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হতে পারে এমন আশঙ্কা করা। তাই মিথ্যাটা বলে ফেলাটাই ভালো বলে মনে হয়, জানান মানি কোটিং ইনস্টিটিউট এর প্রতিষ্ঠাতা এবং 'দ্য হার্ট অব মানি' বইয়ের লেখক ডেবোরাহ প্রাইস। কেনাকাটার সিদ্ধান্ত যদি একজনের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সে ক্ষেত্রে তিনি অর্থের বিষয়টি গোপন রাখেন তবে সেখানে প্রতারণার মনোভাব তৈরি হয়। দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, কেউ তার আর্থিক অবস্থা নিয়ে লজ্জাবোধ করেন। যার কারণে অপজনের কাছ থেকে তা লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। হয়তো এ অবস্থার কথা জানলে সঙ্গী বা সঙ্গিনী তা মেনে নিতে পারবেন না- এমন ভয়ে তা লুকিয়ে রাখতে চান অনেকেই।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : এ ধরনের সমস্যা আসলে অর্থকে কেন্দ্র করে হয় না। এখানে অন্যকিছু রয়েছে বলে জানান প্রাইস। একা বসে চিন্তা করুন আপনার মনে কেনো এমন হয়। এটি আপনার পার্টনার কীভাবে নিতে পারেন। প্রতারণার পথ গ্রহণ করলে নিজের মধ্যে যে অনুশোচনা তৈরি হয় তাতে আপনারই মানসিক শান্তি নষ্ট হয়। তা ছাড়া সত্যটা জানলে আপনার পার্টনার একে কীভাবে নেবেন ইত্যাদি প্রয়োজনে লিখে লিখে তা বোঝার চেষ্টা করতে পারেন।
২. 'আমি টাকা-পয়সা গুছিয়ে রাখতে পারি না, তুমি করো' : অনেকেই অদ্ভুতভাবে মনে করতে পারেন যে, তিনি টাকা-পয়সা খরচ বিষয়ক কাজগুলো ঠিকমতো করতে পারেন না। হয়তো ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা বা ভাই-বোন বা বন্ধুর মন্তব্য শুনে শুনে নিজের বিষয়ে এই ধারণা হয়েছে আপনার। তাই দায়িত্বশীল হওয়ার চেষ্টা করুন।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : হতে পারে আপনি এসব হিসেব ঠিকমতো রাখতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে খুঁজে বের করুন আপনি কী কী ঝামেলা সৃষ্টি করেন। কত আয় করেন, কত খরচ হয় এগুলো নিশ্চয়ই বোঝেন। কাজেই বাকিটুকুও পারবেন। তা ছাড়া মোবাইলের বিল বা কর্মক্ষেত্রের অন্যান্য খরচ নিশ্চয় একাই করেন। কাজেই পারছেন না তা কিন্তু নয়। অতীতে যদি অর্থ বিষয়ে কোনো বড় ভুল করে থাকেন, তবে তার মানে এই নয় যে আপনি অর্থ ব্যবস্থাপনায় সব সময় ব্যর্থ। তাই অর্থ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কোনো সঙ্কোচ করবেন না।
৩. 'আমরা অবশ্যই যোগান দিতে পারবো' : এটা কোনো নির্জলা মিথ্যা নয়। এটা কোনো কিছু চিন্তা না করে বা আন্দাজ করেই বলা হয়। হয়তো দূরে কোথাও ঘুরতে যাবেন। তার খরচ হিসেব না করেই বলে ফেললেন যে তার যোগান দেওয়া সম্ভব। কিন্তু খুঁটিনাটি হিসেব করে বললে পরে এ নিয়ে অশান্তি তৈরি হয় না।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : আমরা অনেক সময়ই অনেক ক্ষেত্রেই অর্থ খরচ করতে চাই। অনেক সময় আমরা মনের একটি অংশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হই যাকে বলে ইন্সটিঙ্কটিভ ব্রেইন। এর মাধ্যমে বাস্তব অবস্থার উপলব্ধি নয় বরং ইচ্ছার দ্বারা সবকিছু পরিচালিত হয়। ফলে অর্থ খরচের বিষয়টি এ ক্ষেত্রে আবেগ দ্বারা পরিচালিত হয়। তাই এ ধরনের অর্থ খরচের খাত সামনে এসে পড়লে বাস্তবতার নিরিখে ভাবুন।
৪. 'আমার টাকাই তোমার টাকা' : এক জরিপে দেখা গেছে, দুজনের উপার্জনে সংসার চলছে এমন দম্পতিদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজনের লুকানো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, স্টেটমেন্ট, বিভিন্ন এবং সঞ্চয় থাকে। এসব ক্ষেত্রে কথা উঠলেই ভুল তথ্য প্রদান করে তারা নিজেদের আসল তথ্য ঢাকতে চান এবং সত্য উপস্থাপনকে নিজের জন্য অনিরাপদ বলে মনে করেন, জানান 'ইমোশনাল কারেন্সি' বইয়ের লেখক কেট লেভিনসন। এমনকি ভালো উদ্দেশ্য নিয়েও যদি নিজের অর্থ বিষয়ক তথ্য গোপন করা হয়, তবুও সেখানে বিশ্বাসের অভাব থেকেই যায়।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : এসব তথ্য প্রকাশ করতে অনিরাপত্তায় কেন ভুগছেন তা কোনো এক্সপার্টের সঙ্গে আলাপ করে বোঝার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, আপনার এ ধরনের আচরণের পেছনে নিরাপত্তাবোধের বাইরের কোনো বিষয় দায়ী। এ জন্য সঙ্গিনীর সঙ্গে খোলামেলা আলাপও করে নিতে পারেন। যে বিষয়টি আপনাকে তার সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করছে তা উপস্থাপন করাটা জরুরি। এ ক্ষেত্রে অর্থবিষয়ক জটিলতা সমস্যার মুখ্য বিষয় নয়, বরং সঙ্গিনীর সঙ্গে যে শূন্যতা তৈরি হচ্ছে তাই মূল বিষয়।
৫. 'আমি কয়েক বছর ধরে একই জুতা পরছি' : আপনার মনে ভয় হয় যে, নিজের জন্য যা খরচ করছেন সে বিষয়ে আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মনে বিরক্তি বা অভিযোগ তৈরি হতে পারে। এই ভয় থেকে নিজের সামনে একটি ঢাল গড়ে দিতেই এ ধরনের কথা বলা হয়। যদি অর্থের ওপর অপরজনের নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং নিজের বাজে খরচের স্বভাব থাকে তবে এ ধরনের আচরণ করে মানুষ। ছোটবেলায় রাগী বাবার চোখের আড়ালে নতুন কেনা কোনো জিনিস মা যেমন লুকিয়ে রাখতে বলেন, এটাও ঠিক একই মানসিকতা থেকে আসে।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : আর্থিক অবস্থার বাস্তব হিসেব-নিকেশ করুন। খরচের সঠিক হিসেব করে একটি বাজেট তৈরি করুন। নির্দিষ্ট খরচ বাদ দিয়ে অন্যান্য খরচের জন্য কিছু অর্থ আলাদা করে রাখুন। পার্টনারের রাগ হতে পারে এমন খরচের হাত থেকে বাঁচতে এই বাজেটের বাইরে এক পাও এগোবেন না।
৬. 'আমার কোনো ঋণ নেই' : ঋণ নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কারণ সবারই আর্থিক লেনদেন চলতে থাকে। ঋণ নেওয়ার কারণে লজ্জা বোধ হতে পারে বা ঋণী হিসেবে পার্টনার আপনাকে কী না কী মনে করতে পারেন, এই আশঙ্কা থেকে এমন কথা বলে মানুষ। মূলত অবচেতন মনে ঋণ নিয়ে মানুষের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করে এবং একে সম্মানহানির উপাদান বলে মনে করা হয়।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : ঋণ থাকাটা স্বাভাবিক ব্যাপার। তবুও ঋণের ভার থেকে মুক্ত হতে চাইলে কোনো কাউন্সিলর বা এক্সপার্টের সঙ্গে আলাপ করুন। ঋণ যদি যথা সময়ে পরিশোধের অভ্যাস থাকে, তবে তা নিয়ে কোনো লজ্জাবোধের প্রয়োজন নেই। আবার সুদে যদি ঋণ করেন, তবে এটা ব্যবসায়িক লেন-দেনের মতোই বিষয়। তবে ঋণ বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ থাকাটা জরুরি।
৭. 'আমার এত টাকা নেই' : কিছু মানুষ যে পরিমাণ উপার্জন করেন তা লুকিয়ে আরো কম পরিমাণ উপস্থাপন করেন। এটা এক ধরনের আশঙ্কা থেকে আসে। যেমন- আপনি যাকে জীবনসঙ্গিনী করার পরিকল্পনা করছেন তাকে কম উপার্জনের বিষয়টি আকার ইঙ্গিতে বোঝাচ্ছেন। কারণ আপনার মনে ভয়, তিনি আপনার অর্থ দেখে সম্পর্ক গড়তে চান। তাই তার সঙ্গে একটি মিথ্যে নিয়ে ঝুলে রইলেন আপনি। যদি পার্টনারও উপার্জন করেন এবং তার উপার্জন আপনার চেয়ে অনেক কম হয়, তখন তাকে সাহায্য করার ভয় থেকেও এমন তথ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মানুষ।
অভ্যাস ত্যাগ করুন : এ ক্ষেত্রে অবশ্যই এক বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হতে হবে আপনাকে। অনেক দম্পতি দেখা যায় যারা অনেক অর্থশালী এবং পরস্পরের কাছ থেকে অর্থের যাবতীয় হিসেব লুকিয়ে রাখেন। এ ক্ষেত্রে একজনের অর্থের ওপর অন্যের বাজে উদ্দেশ্য তৈরি হতে পারে এমন ধারণা জন্মে। এ ধরনের আশঙ্কা বা ধারণা সম্পর্কের অবনতি ঘটায় অতি দ্রুত। একটু ভাবুন, এই অর্থ কী এতই বেশি যা আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে প্রতারক বানিয়ে দেবে? আপনি কী এই অর্থের ভার বইতে অপারগ? এসব প্রশ্নের জবাব একজ বিশেষজ্ঞ বুঝিয়ে দিতে পারেন আপনাকে।
সূত্র : বিজনেস ইসনাইডার
No comments:
Post a Comment