Sunday, April 6, 2014

আজ প্রয়াত মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের ৮৩তম জন্মদিন


কোটি ভক্তের ভালোবাসায় সিক্ত সুচিত্রা সেন ছিলেন নিঃসঙ্গ প্রিয় এক বাঙ্গালী নারী। যিনি রহস্যময় এক কারণে নিজেকে আড়াল করে রাখতেই বেশি পছন্দ করতেন। পাশাপাশি তাকে নিয়ে পত্রিকাগুলো কি লিখলো তা কখনও পড়েও দেখতে না। আজীবন নিজের সঙ্গে সংগ্রাম করে গেছেন তিনি।

সেই সদ্য প্রয়াত মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের ৮৩তম জন্মদিন আজ। ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের পাবনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আর চলতি বছলের ১৭ জানুয়ারি ভারতের কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

সুচিত্রা সেনের পারিবারিক নাম ছিল রমা দাশগুপ্ত। তার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মায়ের নাম ইন্দিরা দেবী। পাবনাতেই তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের কয়েক মাস আগে স্বপরিবারে ভারত চলে যান সুচিত্রা সেন। সে বছরই ১৯৪৭ সালে ঢাকার অভিজাত পরিবারের সদস্য শিল্পপতি আদিনাথ সেনের পুত্র দিবানাথ সেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর ১৯৫২ সালে তিনি কলকাতার চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রবেশ করেন । ওই বছর ‘শেষ কোথায়’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রূপালি পর্দায় তার যাত্রা শুরু হলেও শেষ পযর্ন্ত চরচ্চিত্রটি মুক্তি পায়নি।
 
১৯৭৮ সালে চলচ্চিত্রকে বিদায় জানিয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। এভাবে নিজেকে আড়াল করে রাখেন মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। এমন কি মৃত্যুর আগে তিনি যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন, সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুচিত্রার আড়ালে থাকাকে সম্মান জানিয়ে তার জন্যে বিশেষ নিরাপত্তারা ব্যবস্থা করেছিল।
 
অভিনয় জীবনে তিনি দেশ বিদেশের অসংখ্য পুরষ্কার লাভ করেন। ১৯৬৩ সালে অজয় করের ‘সাত পাকে বাঁধা’ চলচ্চিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। এটাই ভারতীয় কোন চলচ্চিত্র শিল্পীর আন্তর্জাতিক আসরে পাওয়া প্রথম স্বীকৃতি।
 
এছাড়া দীর্ঘ ২৬ বছরের অভিনয় জীবনে নানা পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পদ্মশ্রী পান। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাংলাবিভূষণ সম্মাননা দেয়া হয় তাকে।
 
২০০৫ সালে সুচিত্রা সেনকে ভারতের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার দেয়ার প্রস্তাব করা হলে সুচিত্রা সেন দিল্লীতে গিয়ে ওই সম্মান গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। কারণ তিনি তখন রামকৃষ্ণ মিশনের সেবায় নিয়োজিত। এছাড়া তিনি আড়াল ভেঙ্গে পুরস্কার গ্রহণের পক্ষপাতি ছিলেন না।
 

No comments:

Post a Comment