Thursday, April 3, 2014

সেতু ভাঙার সময় স্লাব ভেঙে চার শ্রমিকের মৃত্যু



গাজীপুরের কাপাসিয়ায় একটি পুরনো সেতু ভাঙার সময় স্লাব ভেঙে বৃহস্পতিবার ৪ শ্রমিক মারা গেছেন। এদের তিনজনই পরস্পর আত্মীয়। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুই শ্রমিক। একই দিনে কালিয়াকৈরে কালভার্টের ছাদ ঢালাইয়ের সময় সাটারিং ধসে আহত হয়েছেন পাঁচ শ্রমিক। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কাপাসিয়া : সদর ইউনিয়নের চাঁদপুর সড়কের বরুণ বাজার সংলগ্ন পুরনো সেতু ভাঙছিলেন ১০-১২ শ্রমিক। সকাল ৮টার দিকে স্লাব ধসে এর নিচে চাপা পড়েন শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার চর আন্দালিয়া গ্রামের তৈয়ব আলীর পুত্র হলু মিয়া (৪৫), কবুতরমারী গ্রামের ইউনুছ আলীর পুত্র আবু বকর ওরফে বাকার আলী (৩৭) ও হাকিম উদ্দিনের পুত্র আজগর আলী (৩০) এবং তাদের সঙ্গে নতুন যোগ দেয়া অজ্ঞাতনামা এক শ্রমিক (৪২)। ঘটনাস্থলেই মারা যান তারা। এছাড়া চাপা পড়া আরও দুই শ্রমিক একই এলাকার মোফাজ্জল হোসেন (৪০) ও কাপাসিয়ার বরুণ গ্রামের রহমত আলীর পুত্র শাজাহানকে (৫২) গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের তত্ত্ব¡াবধানে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সোয়া ৩ কোটি টাকায় পুরনো সেতু ভেঙে নতুন সেতু গড়ার কাজ দেয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হানিফ এন্টারপ্রাইজকে। গাজীপুরের মজিদ বিএনসি নামক এক ঠিকাদার সেতুটি ভাঙার কাজ করছিলেন। তবে দুর্ঘটনার সময় বা পরে ঠিকাদার বা সংশ্লিষ্ট কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেতু ভাঙার কাজে নিরাপত্তায় অবহেলার অভিযোগ তুলে ঠিকাদারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও হতাহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। 

নিহতদের এক স্বজন বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় মামলা করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নব-নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আজিজুর রহমান উদ্ধার কাজ তদারকি করেন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, গাজীপুর জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মহসীন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলাউদ্দিন আলী ছুটে আসেন। কাজ তদারকি কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী জানান, পুরনো এ সেতুটি ভাঙার আগে জনচলাচলের জন্য সংযোগ সড়ক তৈরি করার কথা। এছাড়া সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকেও অবগত করতে হবে। কিন্তু ঠিকাদার কাউকে না জানিয়ে অপরিকল্পিতভাবে তা ভাঙার কাজ শুরু করেন।

কালিয়াকৈর : ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন বিভাগের অধীনে ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সিনাবহ-মাঝুখান সড়কের মাঝুখানে খালের ওপর কালভার্ট নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিফাত এন্টারপ্রাইজ। সাবকন্ট্রাক্টে নিয়ে মামুন নামে এক ঠিকাদার ৩ মাস আগে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। বৃহস্পতিবার ছাদ ঢালাইয়ের সময় তা ধসে পড়ে। এতে চাপা পড়েন শ্রমিক হাসান, তমিজ উদ্দিন, আবদুল মান্নান, তমিজ উদ্দিন ও শরিফুল ইসলাম। তাদের উদ্ধার করে সফিপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, দুই পাশের রড জোড়া না দিয়ে তার দিয়ে বেঁধে দেয়া হয়েছে। কাজে নিুমানের রড ও সিমেন্ট ব্যবহারের অভিযোগও করেন স্থানীয়রা। কালিয়াকৈর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহম্মেদ রেজা আল মামুন বলেন, কালভার্ট নির্মাণ কাজে নিুমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তে কোনো অনিয়ম প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

No comments:

Post a Comment