বিনোদন ডেস্ক :
লাশকাটা ঘরে যে প্রতিদিন লাশ কাটে মানুষের
মৃত্যু আর লাশ তাদের কাছে উপকরণ। অনেকে অপেক্ষা করে লাশের জন্য। অথচ সেই ডোম চায়
না তার প্রিয়জনের মৃত্যু। সে লাশ কাটে লাশের শরীরটাকে বাঁচিয়ে রাখতে। মরে গেলে সে তেমনি
একটা লাশই হবে। সে একদিন তার আত্মীয়, ভাই, চাচা-চাচী, ভাই বোনের লাশ কাটতে গিয়ে বুঝতে পারে মৃত্যুর যন্ত্রনা। তারপরেও কি লাশের
জন্যে তার অপেক্ষা শেষ হবে? নাকি সামাজিক অবস্থান
আর জীবিকা তাকে লাশের জন্যই অপেক্ষা করাবে? তেমনি এক গল্প নিয়ে
লাশকাটা ঘরের গল্প।
এটি সেজান মাহমুদের একটি প্রামাণ্যচিত্র।এবার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি চিত্রনির্মাতা
সেজান মাহমুদের প্রামাণ্যচিত্র ‘লাশকাটা ঘর’ রিচমন্ড আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘অনারেবল মেনশন অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে। বাংলাদেশের ডোমদের
জীবনের নানা দিক উপস্থাপন করা হয়েছে এই ছবিতে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি
থেকে ২ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াতে অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা এগ্রিকালচারাল
অ্যান্ড মেকানিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে ‘পাবলিক হেলথ’ অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক সেজান মাহমুদ। গত বৃহস্পতিবার
সন্ধ্যায় অনলাইনে যোগাযোগ হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সলিমুল্লাহ মেডিকেল
কলেজে পড়ার সময় থেকেই ডোমদের জীবন নিয়ে আমার আগ্রহ তৈরি হয়। একটি ঘটনা আমাকে
অলোড়িত করেছিল। ভুল করে ফরমালিন
খেয়ে একটি ডোম পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়। আর তাদের লাশ কাটাছেঁড়া করতে হয়েছিল তাদেরই আত্মীয়দের। যে ডোমেরা প্রতিদিন
লাশ কাটে, সেই ডোমেরা ফিরে এল লাশ হয়ে, শোয়ানো হলো একই টেবিলে। আর তাদের দেহ কাটতে
হলো তাদের বাবা-চাচা বা ভাইকে। সেটা ১৯৮৮ সালের কথা। আমার ছবিতে সেই
ঘটনার কথাও আছে।’
সেজান মাহমুদ আরও বলেন, ‘ডোমদের জীবনের নানা কথা মানুষকে জানানো ও তাদের সামাজিক মর্যাদা
নিশ্চিত করার প্রেরণা থেকেই ছবিটি তৈরি করেছি।’
No comments:
Post a Comment