স্পোর্টস ডেস্ক-
স্যান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে ইন্দ্রপতন! ঘরের
মাঠেই এল ক্লাসিকোতে হেরে বসল রিয়াল মাদ্রিদ ৷ এল ক্লাসিকোতে বিতর্ক হবে না তা কী হয়!
হয়নি ৷বিতর্ক তাড়া করেছে রবিবারের রাতের এল ক্লাসিকোকে ৷ সাতটা গোল হল ম্যাচে ৷ হতে
পারত আরও বেশি ৷ ঘটনার ঘনঘটা রিয়াল-বার্সা লড়াইয়ে ৷
সের্জিও রামোস লাল কার্ড দেখলেন
৷ ক্রিশ্চয়ানো রোনাল্ডো পেনাল্টি থেকে গোল করলেন ৷ করিম বেনজিমা আগুন জ্বাললেন শুরুতে
৷দু-দুটো গোল করলেন৷ গতি দিয়ে বার্সা ডিফেন্স নয়ছয় করলেন এঞ্জেল ডি’ মারিয়া ৷নাটকের যাবতীয় মশলা নিয়ে হাজির এল ক্লাসিকো৷ দিনের শেষে রোনাল্ডোকে ছাপিয়ে গেলেন লিও মেসি৷ হ্যাটট্রিক
করে বার্নাব্যুতে বার্সাকে জেতালেন সেই মেসিই ৷
প্রথমে গোল করে এগিয়ে যায় বার্সা ৷
আন্দ্রেজ ইনিয়েস্তা এগিয়ে দেন ক্যাটালান ক্লাবকে ৷গোলের আগে ২৪টা পাস খেলে বার্সা ৷
এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া পাস খেলার পর মেসির কিলার পাঞ্চ ৷
নিখুঁত বল বাড়ালেন ইনিয়েস্তাকে ৷ ইনিয়েস্তা বল পেয়েই বাঁ পায়ে কামান দাগলেন ৷ রিয়ালের
গোলকিপার দিয়াগো লোপেজের কিছুই করার ছিল না ৷ খেলার বয়স তখন সাত মিনিট ৷
তার পাঁচ মিনিট
পরই সমতা ফেরানোর মতো সুযোগ পেয়েছিলেন বেনজিমা ৷ এঞ্জেল ডি’ মারিয়া গোলের গন্ধমাখা বল বাড়িয়েছিলেন ফরাসি স্ট্রাইকারকে ৷
সে যাত্রায় বল উড়িয়ে দেন বেনজিমা ৷ এরপরের স্পেল রিয়ালের ৷ উইং দিয়ে পাখির মতো উড়লেন
ডি’ মারিয়া ৷বার্সা ডিফেন্স ডি’ মারিয়াকে রুখতে গিয়েই
তখন গলদঘর্ম ৷ডি’ মারিয়ার একটা ক্রস থেকে মাথা ছুঁইয়ে করিম বেনজিমা সমতা ফেরান
৷
ম্যাসচেরানোকে টপকে গোল করে যান বেনজিমা৷ভালদেজ শরীর ছুড়ে দিয়েও গোল বাঁচাতে পারেননি
৷দ্বিতীয় গোলটির ক্ষেত্রে সেই একই জুটি ৷ এক্ষেত্রেও ডি’ মারিয়া ও বেনজিমা৷ আর্জেন্তাইন উইংগারের সেন্টার ম্যাসচেরানো
বিপদমুক্ত করতে পারেননি৷ বেনজিমা বল রিসিভ করেই বার্সার জালে বল জড়ান ৷জেরার্ড পিকেকে
দায়ী করা যায় ৷বেনজিমা যখন ফাঁকায় দাঁড়িয়ে শট নিচ্ছেন তখন পিকের ঝাঁপানো উচিত ছিল ৷
পিকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন বেনজিমা গোল করছেন ৷২৪ মিনিটে ২-১ এগিয়ে যায় রিয়াল ৷ তারপরও
বেনজিমার ধাক্কায় বেসামাল বার্সা৷ রিয়াল যেমন খুশি করে বার্সাকে নাচাচ্ছে ৷ রক্ষণে
বোঝাপড়া হারিয়ে ফেলেছেন ম্যাসচেরানোরা ৷ কোনোরকমে গোললাইন থেকে বল বাঁচান পিকে৷ না
হলে তখনই হ্যাটট্রিক হয়ে যেত বেনজিমার ৷ বিরতির ঠিক আগে মেসি ২-২ করেন ৷এক্ষেত্রে নেইমার
ও মেসির বোঝাপড়া ফুল ফোটায় ৷
মেসি গোলটি করার পরই ফ্যাব্রেগাস ও পেপের মধ্যে লেগে যায়
৷ দু’জনেই মাথা দিয়ে গুঁতো মেরে হলুদ কার্ড দেখেন ৷ বিরতির পর মঞ্চে
নামেন রোনাল্ডো ৷ মেসি গোল করেছেন, তিনি কি চুপ থাকতে পারেন
একাধিক বার্সা ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে রোনাল্ডো ক্যাটালান ক্লাবের গেলমুখে
বিপদ তৈরি করলে, তাকে ট্রিপ করে ফেলে দেন ড্যানি অ্যালভেজ ৷ রেফারি পেনাল্টি
দেন ৷ তবে অ্যালভেজ বক্সের বাইরে রোনাল্ডোকে ফেলেছিলেন ৷
ওটা পেনাল্টি ছিল না ৷ যাই
হোক রেফারির সিদ্ধান্তই শেষ কথা৷ পেনাল্টি থেকে গোল করেন রোনাল্ডো ৷ এরপর মেসি ম্যাজিক
৷ মাঝমাঠ থেকে আর্জেন্টাইন মহাতারকা ছবির মতো বল বাড়িয়েছিলেন নেইমারকে ৷ রিয়ালের পেনাল্টি
বক্সে নেইমার পড়ে গেল রেফারি পেনাল্টি দেন ৷ এক্ষেত্রে নেইমার আদায় করেন নেন পেনাল্টি
৷ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে মার্সেলহোকে এড়িয়ে বল ধরেন ব্রাজিলীয় ৷
রামোস এগিয়ে আসছেন
দেখে নেইমার বলটা নিয়ে এমনভাবে দৌড়লেন যে রামোসের সঙ্গে তার শারীরিক সংঘর্ষ কেবল সময়ের
অপেক্ষা ৷ হলোও তাই ৷ লাল কার্ড দেখলেন রামোসকে ৷ রেফারি দিলেন পেনাল্টি ৷ ক্যামেরার
এক অ্যাঙ্গেল থেকে মনে হয়েছে,
রামোস নেইমারকে ট্রিপ করেছেন ৷আর একটি অ্যাঙ্গেল
থেকে কিছুই বোঝা যায়নি ৷প্লে অ্যাক্টিং করে নেইমার পেনাল্টি আদায় করে নেন৷ পেনাল্টি থেকে গোল করে ৩-৩ করেন মেসি ৷
মেসির হ্যাটট্রিকের
গোল আসে ৮৩ মিনিটে৷ সেটিও পেনাল্টি থেকে ৷ এক্ষেত্রে ইনিয়েস্তাকে ফাউল করেছিলেন জ্যাভি
অ্যালোন্সো ৷ পেনাল্টি থেকে মেসি জাল কাঁপান ৷এই পেনাল্টিটা নিয়েও বিতর্ক থেকে যাবে
৷ বেশ কালি খরচ হবে রেফারির এহেন সিদ্ধান্ত নিয়ে৷ পেনাল্টিগুলো অবশ্য অদ্ভুত মারলেন
মেসি ৷
এমন জায়গায় বল রাখলেন যার কুলকিনারা করতে পারেননি দিয়েগো লোপেজ৷ বার্নাব্যু
থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে গেল বার্সেলোনা ৷ লা লিগায় বার্সা তিন নম্বরে এখন ৷ শীর্ষে অ্যাটলেটিকো
মাদ্রিদ ৷ দু নম্বরে রিয়াল মাদ্রিদ ৷ তিনটি দলই ২৯টি করে ম্যাচ খেলেছে ৷ অ্যাটলেটিকো
ও রিয়ালের পয়েন্ট ৭০ ৷ বার্সা ৬৯ ৷
No comments:
Post a Comment