Monday, March 31, 2014

পাঁচ দফা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিশাল ব্যবধানে জয়


পঞ্চম দফা উপজেলা নির্বাচনেও জয় পেল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। চেয়ারম্যান পদে বেশি সংখ্যক উপজেলায় এ দল সমর্থিত প্রার্থীরা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। 

সব মিলিয়ে পাঁচ দফা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিশাল ব্যবধানে জয় পেল। অপরদিকে প্রথম দুই দফায় ভালো করলেও শেষ তিন দফায় তুলনামূলক পিছিয়ে পড়েছে বিএনপি। দলটির অভিযোগ, সরকার ও নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের জয় ছিনিয়ে নিয়েছে।

ব্যাপক সহিংসতার মধ্য দিয়ে সোমবার ৭৩ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রাত সোয়া ১টা পর্যন্ত সর্বশেষ পাওয়া ৭১ উপজেলার বেসরকারি ফলাফলে ৫০ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। 

এছাড়া দলটির ২ বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। অপরদিকে ১২ উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। পাশাপাশি দলটির এক বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। 

তৃতীয় অবস্থানে থাকা জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থী ৩ উপজেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এসব উপজেলায় জাতীয় পার্টি সমর্থিত কেউ জয় পাননি। এর বাইরে ইউপিডিএফ সমর্থিত ১টি উপজেলায় জয় পেয়েছে। টাঙ্গাইলের বাসাইলে ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে চার দফায় ৩৮৫ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ১৭২, বিএনপি ১৪১ ও জামায়াত ৩৩টিতে জয় পেয়েছে। ৮ উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ৬ উপজেলায় বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী জয় পেয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগ সব মিলিয়ে ১৮০ ও বিএনপি ১৪৭ উপজেলায় জয় পেয়েছে। সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ৩ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন।

বাকি উপজেলাগুলোতে অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। প্রথম দফায় মোটামুটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলেও পরের ধাপগুলোতে সহিংসতার মাত্রা ও পরিমাণ বেড়েছে। ফলাফলের চিত্র পাল্টে যায়। প্রথম দুই দফায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা বেশি সংখ্যক উপজেলায় জয় পেয়েছিলেন। শেষ তিন দফায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা বেশি সংখ্যক উপজেলায় জয় পান। সব মিলিয়ে দলগতভাবে আওয়ামী লীগ এগিয়ে রয়েছে।

পঞ্চম দফায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন যারা- দিনাজপুরের বিরলে বিএনপি সমর্থিত আ ন ম বজলুর রশিদ, পাবর্তীপুরে একই দলের আমিনুল ইসলাম ও হাকিমপুরে মোঃ আকরাম হোসেন, নীলফামারীর ডোমারে আওয়ামী লীগের আবদুর রাজ্জাক, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগের মাহবুবুজ্জামান, গাইবান্ধার ফুলছড়িতে আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান ও সুন্দরগঞ্জে জামায়াতের মাজেদুর রহমান, বগুড়া সদরে বিএনপির আলী আজগর হেনা, রাজশাহীর পবায় জামায়াতের মকবুল হোসেন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগের আজাদ রহমান, বেলকুচিতে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আলী আকন্দ,  পাবনা সদরে আওয়ামী লীগের মোশাররফ হোসেন, বেড়ায় আওয়ামী লীগের আবদুল কাদের, চুয়াডাঙ্গার সদরে আওয়ামী লীগের আশাদুল হক বিশ্বাস, আলমডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের হেলাল উদ্দিন, সাতক্ষীরা সদরে আওয়ামী লীগের আসাদুজ্জামান বাবু ও দেবহাটায় একই দলের আবদুল গণি, তালায় আওয়ামী লীগের ঘোষ সনৎ কুমার, বরগুনা সদরে আওয়ামী লীগের আব্বাস হোসেন মন্টু মোল্লা, বামনায় একই দলের সাইতুল ইসলাম লিটু মৃধা ও পাথরঘাটায় একই দলের রফিকুল ইসলাম রিপন ও আমতলীতে (৭ কেন্দ্র স্থগিত থাকায় ফল প্রকাশ হয়নি), পটুয়াখালীর দশমিনায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, কলাপাড়ায় আওয়ামী লীগের মোতালেব তালুকদার, টাঙ্গাইল সদরে আওয়ামী লীগের খোরশেদ আলম, ঘাটাইলে আওয়ামী লীগের নজরুল ইসলাম, মির্জাপুরে একই দলের এনায়েত হোসেন ও গোপালপুরে একই দলের ইউনুস ইসলাম তালুকদার, জামালপুরের মাদারগঞ্জে আওয়ামী লীগের ওবায়দুর রহমান, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের আশরাফ উদ্দীন বাদল, ত্রিশালে বিএনপির জয়নাল আবদিন ও নান্দাইলে আওয়ামী লীগের আবদুল মালেক চৌধুরী স্বপন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায় আওয়ামী লীগের শহীদুল ইসলাম জেমস ও পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ রফিকুল ইসলাম রেনু, মুন্সীগঞ্জের টংগীবাড়ীতে আওয়ামী লীগের কাজী আবদুল ওয়াহিদ, সিরাজদিখানে একই দলের মহিউদ্দিন আহমেদ ও লৌহজংয়ে একই দলের ওসমান গণি তালুকদার, গাজীপুরের কালিগঞ্জে আওয়ামী লীগের মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশ, নরসিংদী সদরে বিএনপির মনজুরে এলাহী, মনোহরদীতে আওয়ামী লীগের সাইফুল ইসলাম খান বীরু, নারায়ণঞ্জের রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের শাহজাহান ভূইয়া, আড়াইহাজারে আওয়ামী লীগের শাহজালাল মিয়া, সোনারগাঁয়ে বিএনপির আজহারুল ইসলাম মান্নান, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে আওয়ামী লীগের এটিএম নূরুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে বিএনপির হারুন অর রশীদ ও তাহিরপুরে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুজ্জামান কামরুল, সিলেটের বিয়ানিবাজারে আওয়ামী লীগের আতাউর রহমান, মৌলভীবাজারের জুড়িতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত এমএ মোমিত আশুক ও রাজনগরে একই দলের আছকির খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদরে আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম, কসবায় আওয়ামী লীগের আনিসুল হক ভূইয়া, আশুগঞ্জে বিএনপির আবু আসিফ আহমেদ, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বিএনপির শেখ বশির আহমেদ, কুমিল্লার মুরাদনগরে আওয়ামী লীগের সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম ও চান্দিনায় একই দলের তপন বকশী, ফেনীর ছাগলনাইয়ায় আওয়ামী লীগের মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগের খায়রুল আনাম চৌধুরী ও হাতিয়ায় একই দলের মাহবুব মোর্শেদ লিটন, লক্ষ্মীপুর সদরে আওয়ামী লীগের একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু, রামগতিতে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ, রামগঞ্জে আকম রুহুল আমিন, রায়পুরে আওয়ামী লীগের মোঃ আলতাপ হোসেন হাওলাদার, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে আওয়ামী লীগের মোঃ শাহজাহান, কক্সবাজারের সদরে জামায়াতের জিএম রহিমুল্লাহ, টেকনাফে আওয়ামী লীগের জাফর আলম, উখিয়ায় বিএনপির সরওয়ার জাহান চৌধুরী, খাগড়াছড়ির দিঘিনালায় ইউপিডিএফের কমল চাকমা, রাঙ্গামাটি সদরে অরুণ কান্তি চাকমা, লংগদুতে বিএনপির তোফাজ্জল হোসেন, রাজস্থলীতে আওয়ামী লীগের উথিনচিং মারমা ও বিলাইছড়িতে জেএসএসের শুভ মঙ্গল চাকমা। 

No comments:

Post a Comment