Saturday, March 22, 2014

বিসিবির জোরে কালোবাজারিদের দাপট



বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তাদের নেতৃত্বেই চলছে কালোবাজারে টিকিট বিক্রি। বিসিবির শীর্ষ কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কালোবাজারিরা। পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে কালোবাজারে টিকিট বিক্রি হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। বিসিবি কর্মকর্তাদের দাপটে তারা অসহায়। বিশেষ সুবিধায় পাওয়া টিকিট বিসিবি কর্মকর্তারা তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে চড়া দামে বিক্রি করছেন। এমনকি বিসিবির নিয়োগ দেয়া স্বেচ্ছাসেবকের কার্ড ঝুলিয়ে স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন গেটে কালোবাজারে টিকিট বিক্রি করছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

শুক্রবার স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকের সামনে থেকে এক কালোবাজারিকে আটক করে পুলিশ। আবু নামের ওই কালোবাজারি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু লিডার হোসাইন আহমদ সামুর গাড়িচালক। আবুকে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে সামু ফোন দেন বিসিবি পরিচালক ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে। পরে নাদেলের ফোন পেয়ে আবুকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল বেলা ২টায় সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের টিকিট কাউন্টারে টিকিট কাটতে যান শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা জৈন্তাপুরের মাসুদ আহমদ ও তার চার বন্ধু। কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে তারা আবু নামের এক কালোবাজারির শরণাপন্ন হন। ৫০ টাকা দামের টিকিট পাঁচটির দাম হাঁকে আবু দুই হাজার টাকা। শেষ পর্যন্ত দর কষাকষি করে টিকিটের মূল্য ১৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। 

আবু তার সঙ্গে থাকা এক সহযোগীর কাছ থেকে টিকিট এনে দেয়ার সময় পুলিশ তাকে ঝাঁপটে ধরে। এ সময় আবুর সহযোগী পালিয়ে যায়। পুলিশের কাছে আটকের পর আবু স্বীকার করে সে সিলিট ক্রিকিট স্টেডিয়ামের ভেন্যু লিডার হোসাইন আহমদ সামুর গাড়িচালক। খেলার প্রথম দিন থেকে সে বিসিবির সৌজন্যে পাওয়া টিকিট কালোবাজারে বিক্রি করছে। টিকিট কালোবাজারিতে তাদের ৮-১০ জনের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। বিসিবি কর্মকর্তারা তাদের কাছে টিকিট সরবরাহ করেন। আটকের পর আবু ফোন দেয় ভেন্যু টিম লিডার সামুকে। আবুর ফোন পেয়ে ছুটে আসেন তিনি। 

এ সময় তিনি আবুকে নির্দোষ দাবি করে পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ আবুকে ছেড়ে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। একপর্যায়ে সামু ফোন দেন বিসিবি পরিচালক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে। 

তিনি ফোনে কথা বলেন দায়িত্বরত এসআই সুদীপ্ত দের সঙ্গে। নাদেলের ফোন পেয়ে সামু ও আবুকে সঙ্গে নিয়ে এসআই সুদীপ্ত স্টেডিয়ামের ভেতরে চলে যান। এসআই সুদীপ্ত দে জানান, ‘টিকিট কালোবাজারির সময় আবুকে আটক করা হয়। বিশ্বকাপের প্রথম দিন থেকে তারা কালোবাজারে টিকিট বিক্রির কথা স্বীকার করেছে।’ 

No comments:

Post a Comment