Sunday, March 30, 2014

শেষ হয়েছে বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ কেন্দ্রে আয়োজিত বিজ্ঞান ও শিল্প প্রযুক্তি মেলা


দর্পণ ডেস্ক - 

রাজধানীর বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ কেন্দ্রে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী বিজ্ঞান ও শিল্প প্রযুক্তি মেলা শনিবার রাতে শেষ হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকা ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের মিলনমেলায় ৭৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২১০টি প্রকল্প প্রদর্শিত হয়েছে। মেলায় প্রায় সাড়ে আটশ খুদে বিজ্ঞানী অংশ নিয়েছিল।

এর আগে বৃহস্পতিবার জ্ঞান ও শিল্প প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ড. ইয়াফেস ওসমান শিশুদের বিজ্ঞানচর্চায় উৎসাহিত করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিজ্ঞান চর্চা ছাড়া একটি জাতির এগিয়ে যাওয়ার বিকল্প কোনো পথ নেই। শিশুরা বিজ্ঞানচর্চার মাধ্যমে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। 

উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার মোঃ আসাদুজ্জামান, বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান আহমেদ ইসমাইল মোস্তফা। ড. ইয়াফেস ওসমান বলেন, শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তারা যেদিন সত্যিকার অর্থে বড় হয়ে দেশের দায়িত্ব ভার গ্রহণ করবে, সেদিনই ৩০ লাখ শহীদের রক্তদানের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব আমরা। তিনি বলেন, শিশুরা সব কিছুই সরলভাবে চিন্তা করে। আমাদেরও সব কিছু শিশুদের মতো চিন্তা করা উচিত। প্রতিমন্ত্রী বলেন, চেষ্টা করলে বাঙালির কাছে অসাধ্য কিছু নেই। 

আমরা শিশুদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করে দিয়ে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিজ্ঞানচর্চা ছাড়া কোনো জাতিরই এগিয়ে যাওয়া বা উন্নতি করার বিকল্প পথ খোলা নেই। মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, দেশের স্কুলশিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। এরা লেখাপড়া করে সত্যিকার অর্থে শিক্ষিত হয়ে উঠলে সেটা দেশের জন্য কত বড় শক্তি হবে তা কি চিন্তা করা যায়? তিনি বলেন, নতুন সহস্রাব্দের সম্পদ হচ্ছে জ্ঞান। 

এসব ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করলেই দেশের জ্ঞান সম্পদ বাড়বে। বয়সে ওরা ক্ষুদে হলেও তাদের আবিষ্কারগুলো কিন্তু ফেলনা নয়। বিসিএসআইআর বিজ্ঞান ও শিল্প প্রযুক্তি মেলায় অংশ নেয়া এই ক্ষুদে বিজ্ঞনীরা উদ্ভাবনী শক্তির প্রয়োগে বানিয়ে এনেছে আকর্ষণীয় ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী। শুক্রবার বিজ্ঞান ও শিল্প প্রযুক্তি মেলার দ্বিতীয় দিনে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রাজধানী ও এর আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসা ৮৫০ ছাত্রের বিভিন্ন ধরনের আবিষ্কারের নানা তথ্য জানতে ভিড় করছে মেলায় আসা শিশু ও কিশোররা। আভিভাবকরাও নিজেদের গুটিয়ে না রেখে ঘুরে ঘুরে দেখছেন নানা আবিষ্কার। 

উৎসাহিত করছেন ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের। মেলায় প্রবেশ করতে প্রথমেই চোখ পড়ে অগ্নি সতর্কতা অ্যালার্মের দিকে। কাছে গিয়ে জানা যায়, এটি আধুনিক ফায়ার অ্যালার্ম। এটি তৈরি করা হয়েছে সিমেন্টের পারদ, পিতলের স্ক্রু, ব্যাটারি ও কলিং বেল দিয়ে। ক্ষুদে বিজ্ঞানী আলামিন এসেছে হাজী মোয়াজ্জেম আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। তার আবিষ্কৃত যন্ত্রের অটো কাউন্ট মিটার। এটি যে কোনো বাসা-বাড়ির গেটে স্থাপন করলে এর সাহায্যে খুব সহজেই গণনা করা যাবে প্রবেশকারীদের। 

অটো কাউন্টার মিটার তৈরিতে খরচ হবে ১০০ টাকা। একটি ক্যালকুলেটার মেশিন, একটি এলডিআর সেন্সর ও আলোর প্রতিফলন হয় এমন একটি লাইটের সমন্বয়ে তৈরি করা যাবে এ যন্ত্রটি। আবিষ্কার প্রসঙ্গে আলামিন বলে, শহর ও গ্রামে এখন প্রচুর চুরি হয়। মূলত কতজন মানুষ বাড়িতে এলো তার হিসাব না থাকার কারণেই দিন দিন চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এমন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা কমিয়ে আনতে আমার এ আবিষ্কার।

No comments:

Post a Comment